Logo

কাল বসন্ত পঞ্চমী, এই দিনটির তাৎপর্য ও ইতিহাস

রিপোটার : / ৭২ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৩

image_pdfimage_print

কমলকন্ঠ ডেস্ক #

কাল বসন্ত পঞ্চমী (Basant Panchami)। এই বসন্ত পঞ্চমী শ্রী পঞ্চমী এবং সরস্বতী পঞ্চমী নামেও পরিচিত। এই বিশেষ দিনটিতে  স্কুল-কলেজ-সহ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, এমনকি ঘরে ঘরে জ্ঞান, সঙ্গীত এবং শিল্পের দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়ে থাকে। হিন্দু ধর্ম মতে বসন্তের প্রথম দিনে উদযাপিত হয় বসন্ত পঞ্চমী । পুরাণ অনুযায়ী এই তিথিতেই ব্রহ্মার মুখ থেকে বিদ্যা ও বুদ্ধির দেবী সরস্বতীর উৎপত্তি।  

 এই বিশেষ দিনটির তাৎপর্য কী?

বসন্ত পঞ্চমী, এই দিনটিতে হলুদ রঙের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এই দিন মানুষ হলুদ রঙের পোশাক পরে, দেবী সরস্বতীর পুজো করে এবং বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে দিনটি উদযাপন করে। এছাড়াও হলুদ রঙ জ্ঞানের প্রতীক এবং বসন্ত ঋতুর আগমনকে নির্দেশ করে। এর পাশাপাশি সর্ষের ক্ষেতকেও নির্দেশ করে বসন্ত পঞ্চমী।

বসন্ত পঞ্চমী ইতিহাস

পৌরাণিক কাহিনী মতে, কালিদাসের স্ত্রী তাঁকে পরিত্যাগ করেছিলেন। সেই দুঃখে নদীতে ডুবে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন কালিদাস। যখন তিনি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন, তখন জল থেকে উঠে আসেন সরস্বতী। তিনি কালিদাসকে স্নান করতে বলেন। তারপর থেকেই তাঁর জীবনে পরিবর্তন আসে। তিনি দেবী সরস্বতীর কাছ থেকে জ্ঞানের আশীর্বাদ পেয়েছিলেন এবং পরবর্তীকালে একজন মহান কবি হয়ে ওঠেন।

আরও একটি ঘটনা আছে বসন্ত পঞ্চমী নিয়ে। বলা হয়, যখন শিব ঠাকুর তাঁর পত্নী সতীর মৃত্যুর পর গভীর ধ্যানে মগ্ন ছিলেন, তখন তাঁর ধ্যান ভঙ্গ করেছিলেন কামদেব। শিবের ধ্যান ভঙ্গ করার জন্য দ্রষ্টারা কামের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। যাতে মহাদেব বিশ্বের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ করতে পারেন এবং পার্বতীরব প্রতি দৃষ্টি দিতে পারেন।

কামদেব শিবের দিকে লক্ষ্য করে ফুল ও মৌমাছি দিয়ে তৈরি একটি তীর নিক্ষেপ করেন। ক্রুদ্ধ মহাদেব তাঁর তৃতীয় চোখ খুলে দিলেন এবং কামকে পুড়িয়ে ছাই করে দিলেন। প্রায় ৪০ দিন ধরে তপস্যার পর শিব বসন্ত পঞ্চমীর দিন কামদেবকে জীবিত করে তোলেন। কথিত আছে যে, তিনি পরে ভগবান কৃষ্ণের পুত্র প্রদ্যুম্ন নামে জন্মগ্রহণ করেন।

এ ছাড়া সরস্বতী সম্পর্কে আরও কিছু অজানা তথ্য রয়েছে। বসন্ত পঞ্চমী উপলক্ষে সেই তথ্যগুলিও জেনে নেওয়া যাক—

১. সরস্বতীকে চার বেদের জননী বলা হয়।

২. সূর্যের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছিলেন গায়ত্রী। সূর্য বন্দনার মন্ত্রেও তাঁর উল্লেখ পাওয়া যায়। পুরাণ মতে, এই গায়ত্রী ছিলেন সরস্বতীরই আর এক রূপ। উল্লেখ্য গায়ত্রীকে বেদমাতা বলা হয়।

৩. তাঁর বাগ্মিতার ক্ষমতা ও দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে সরস্বতীকে ‘বাগদেবী’ নামে ভূষিত করেন ব্রহ্মা।

৪. পুরাণ অনুযায়ী, সরস্বতীর রূপে ব্রহ্মা এতই মুগ্ধ ছিলেন যে, সরস্বতী যে দিকেই থাকুন না-কেন, তিনি যাতে তাঁকে দেখতে পান, এমন কামনা করে বসেছিলেন। এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্যই রয়েছে ব্রহ্মার চারটি মাথা।

৫. বিভিন্ন রূপ ধারণ করতে পারেন দেবী। এ কারণে সরস্বতীর আর এক নাম ‘শতরূপা’।

৬. ভারতের পূর্বপ্রান্তে সরস্বতীকে শিব ও দুর্গার সন্তান মনে করা হয়।

৭. বৌদ্ধ ধর্মেও সরস্বতীর উল্লেখ পাওয়া যায়। বৌদ্ধ ধর্ম অনুযায়ী, সরস্বতী ছিলেন মঞ্জুশ্রীর এক সঙ্গিনী।

৮. পদ্মাসনে অধিষ্ঠিত সরস্বতী। এই পদ্মকে জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়।

৯. সরস্বতীর হাতে শোভা পায় বীণা। এটি শুধুমাত্র সুরেরই নয়, তা বুদ্ধি এবং মেধারও প্রতীক।

১০. চার হাজার বছর আগের ভারতবর্ষে সরস্বতী নদীর উপস্থিতি ছিল। এই নদীটিকে দেবী সরস্বতীর ধরিত্রী রূপ বলা হয়ে থাকে। কথিত আছে, ক্ষত্রিয় বিনাশের পর পরশুরাম এই নদীতে স্নান করে ‘শুদ্ধ’ হয়েছিলেন।


আরো সংবাদ পড়ুন...

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
Developed By Radwan Ahmed