কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।। বৃটিশ শাসনামলে আসামের ইস্টার্ন গেট নামে পরিচিত মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন জনবল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্টেশনটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘদিন থেকে জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে জংশন স্টেশনের সার্বিক কার্যক্রম। নানা সমস্যা লেগেই আছে। ফলে এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। জানা যায়, তৎকালীন আসাম বেঙ্গল রেলপথের ৫টি রেলওয়ে জংশনের একটি জংশন স্টেশন ছিল কুলাউড়া স্টেশন।
সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের কুলাউড়া জংশন স্টেশন দিয়ে জেলার ৩টি উপজেলা বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়ার কয়েক সহস্রাধিক মানুষ প্রতিদিন রেলপথে সিলেট, ঢাকা ও চট্টগ্রামে যাতায়াত করেন। ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে স্টেশনে প্রধান স্টেশন মাস্টার নেই।
সহকারী স্টেশন মাস্টার মুহিব উদ্দিন আহমদ বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টারের দায়িত্ব পালন করছেন। ১ জন স্টেশন মাস্টারসহ সহকারী ৩ জন দায়িত্বে থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে দায়িত্বে আছেন ২ জন। ৫ বছর ধরে টিকিট কালেক্টরের (টিসি) ১৬টি পদের সবকটি শূন্য। টিটির ১৮টি পদের মধ্যে ১৬টিই শূন্য। ট্রেনের পরিচালক ১৯টি পদের ১৫টিই শূন্য। পয়েন্টসম্যান ১৯টি পদের ১৪টিই শূন্য। এছাড়াও বুকিং মাস্টার, পার্সেল সহকারী, সান্টিং স্টাফ, আয়া, পোর্টারসহ ২৩টি পদ শূন্য রয়েছে। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ২০০৬ সালে কুলাউড়া রেল স্টেশনটির নতুন ভবন ও আরেকটি প্ল্যাটফরম নির্মাণসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়।
এরপর দীর্ঘদিন ধরে এই স্টেশনটিতে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন বাড়লেও সেবার মান খুবই নাজুক রয়েছে। ২য় শ্রেণির যাত্রী বিশ্রামাগার ও শৌচাগার ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। স্টেশনে আয়া না থাকায় দ্বিতীয় শ্রেণীর বিশ্রামাগার দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। ফলে ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান যাত্রীদের প্ল্যাটফরমে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ২০০৫ সাল থেকে স্টেশনের জেনারেটর নেই। জেনারেটর না থাকায় রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো স্টেশনটি অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে স্টেশনে থাকা যাত্রীরা ছিনতাইকারী ও টোকাইদের উৎপাতের জন্য বিপাকে পড়তে হয়।
কুলাউড়া রেল স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মো. মুহিব উদ্দিন আহমদ জানান, গ্রেড এক হওয়ায় বর্তমানে স্টেশন মাস্টারের দায়িত্ব পালন করছি। অবসরে যাওয়া আরেকজন চুক্তিভিত্তিক সহকারী স্টেশন মাস্টার দায়িত্ব পালন করছেন। এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম জানান, লোকবল সংকটের বিষয়ে রেলের সংস্থাপন শাখা থেকে নিয়োগের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। পূর্বের সময়কাল থেকে বর্তমানে রেলের অনেক আধুনিকায়ন হয়েছে।