কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।। মণিপুরী নৃত্য দিবস উপলক্ষ্যে মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সমিতির আয়োজনে দুইদিন ব্যাপি অনুষ্ঠানের প্রথম দিন আজ ৬ নভেম্বর সকাল ১১ ঘটিকায় এক বর্নাঢ্য র্যালী অনুষ্টিত হয়। উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু হওয়া এই র্যালীটির আনুষ্টানিক উদ্ভোধন করেন, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব আশেকুল হক। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিংহ, সাধারণ সম্পাদক কমলা বাবু সিংহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শান্তুমণি সিংহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মণিপুরীরা ও অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিবৃন্দ এবং কমলগঞ্জে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৯ খ্রীষ্টাব্দের ৬ নভেম্বর সিলেট ভ্রমনে এলে তিনি মণিপুরী হস্তশিল্পের কারুকাজ দেখে অভিভূত হন। পরে তিনি জানতে পারেন যে, এই হস্তশিল্পের কাপড় বর্ণময় শিল্পকলা সমৃদ্ধ মণিপুরী সম্প্রদায়ের তৈরী। তিনি সিলেটের মাছিমপুর মণিপুরীপাড়ায় গিয়ে মণিপুরী রাখালনৃত্য দর্শন করে মুগ্ধ হয়ে রাসলীলা নৃত্য দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কবিগুরু মণিপুরী রাসনৃত্যর সাজসজ্জা, সাবলীল ছন্দ ও সৌন্দর্যে বিমোহিত হন এবং কলকাতার শান্তি নিকেতনে ছেলেমেয়েদের নৃত্য শেখাবার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। পরবর্তীতে কলকাতার শান্তিনিকেতনে প্রথমবারের মতো মণিপুরী নৃত্য ব্যবহার করে মঞ্চস্থ হয় “নটীর পুজা” ও “ঋতুরাজ”। পরে কবিগুরুর আমন্ত্রণে যোগ দেন মণিপুরী রাসনৃত্যের গুরু মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের নীলেশ্বর মুখার্জ্জী। রবীন্দ্রসংগীতের গভীরতা ও কাব্যময়তার সাথে মণিপুরী নৃত্যের সাবলীল গতি ও বিশুদ্ধ নান্দনিকতার মধ্যে বিশেষ সামঞ্জস্য থাকায় শান্তি নিকেতনে উচ্চাঙ্গ নৃত্যধারার মধ্যে মণিপুরী নৃত্য সর্বাপেক্ষা সমাদৃত হয়। এরপর বাংলাদেশে এবং সারা ভারতে মণিপুরী নৃত্যের প্রচার ও প্রসার ঘটে। কবিগুরুর ছোঁয়ায় মণিপুরী নৃত্য সারাবিশ্বে পরিচিত লাভ করে।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে, মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কমলা বাবু সিংহ জানান দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান আগামীকাল ৭ নভেম্বর বিকাল ৩ টায় ঘোড়ামারা সমাজ কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।