কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলাস্থ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান বৃক্ষ। বনদস্যুরা রাতের আঁধারে কেটে নিচ্ছে বনের এসব মূল্যবান বৃক্ষ। বনের মধ্যে পড়ে থাকা চুরি যাওয়া গাছের মোথাগুলো দেখলেই সহজেই অনুমান করা যায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য এখন কতটুকু হুমকির মুখে । লাউয়াছড়া বনের দু’টি টিলা ঘুরে এচিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, লাউয়াছড়া উদ্যানের বাঘমারা ক্যাম্পের সম্মুখে ও মুজিবের উঠনি এলাকা থেকে গত কয়েকদিনে কেটে নেয়া হয়েছে চারটি মূল্যবান গাছ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, দু’একদিন পর পরই গভীর রাতে এভাবে লাউয়াছড়া বনের বিভিন্ন টিলা থেকে গাছ কেটে নেয়া হয়।স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘ দিন ধরে গভীর রাতে বনের ভেতর থেকে বড় বড় এসব গাছ কেটে পিকআপ ও ঠেলাগাড়ি যোগে পাচার করছে। সংঘবদ্ধ চক্রের এহেন অপঃ তৎপরতার কারণে ক্রমশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে এই উদ্যানটির পুরনো প্রাকৃতিক গাছগুলো । বন ফাঁকা হওয়ার কারনে হুমকির মুখে পড়ছে জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য।
বিরল প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসাবে খ্যাত লাউয়াছড়া উদ্যানটি জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব বহন করলেও বর্তমানে বৃক্ষ উজাড় হওয়ার কারণে অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে বন। পূর্বের মতো দিনের বেলা এখন আর বনে অন্ধকার দেখা যায় না। বনের অবক্ষয়, খাবার ও বাসস্থান সংকটে এখন অতিষ্ঠ প্রাণীকূল। তবে গাছ পাচারের বিষয়ে বাঘমারা বনক্যাম্পের প্রহরী মো. মোতাহের বলেন, গাছ চুরি রোধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। কয়েকবছর পূর্বে যেহারে গাছ চুরি হতো এখন আর সেটি হচ্ছেনা ।
লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন জানালেন, কিছুদিন আগে ঝড়ের কারণে এখানে একটি গাছ পড়ে যায়। এটি ছাড়া আর কোন গাছ চুরি হওয়ার কথা নয়।
এব্যপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, গাছ চুরি হওয়ার মতো কোন সংবাদ পাননি। তবে এই দুই টিলা থেকে চারটি গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে লাউয়াছড়া বনের গাছগাছালি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এসব বিষয়ে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।