কমলকন্ঠ রিপোর্ট।।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মুন্সিবাজার ইউনিয়নের বাসুদেবপুর এলাকার ঠাকুর বাজারে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে নিমিষেই পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে কোটি টাকার সম্পদ । ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার(২৪ আগস্ট) ভোর ৫টায় উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের বাসুদেবপুর এলাকার স্থানীয় বাজার ঠাকুর বাজারে । এলাকাবাসী এই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীসূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোর ৫টায় ঠাকুরবাজারের একটি মুদি দোকান থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন দেখে বাজার প্রহরী বাসুদেবপুর মসজিদের মোয়াজ্জিন আরজু মিয়া মসজিদের মাইকে এনাউন্স করে বিষয়টি এলাকাবাসীকে অভিহিত করেন। কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রে মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শুকুর মোল্লা নামে একব্যাক্তি প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ সাইকেলে অতিক্রম করে এসে অফিস খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় আধাঘন্টা অতিবাহিত করেও পানির পাম্প চালু করতে না পারায় আগুনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং তা দ্রুত বিভিন্ন দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে খবর দেওয়া হয় শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসকে । পরে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
ঠাকুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ জইনউদ্দিন জানিয়েছেন অগ্নিকান্ডে বাজারের নান্নু স্টোর, দেওয়ান চালের দোকান, সাহবাগ ধানের দোকান, মামনি কনফেকশনারি, শাহজালাল ভেরাটিজ স্টোর, কে এম মেডিকেল হল, জননী মেডিকেল সেন্টার, মহিউদ্দিন কম্পিউটার, হাসিম টি স্টল, নকুল সেলুন, মকসন স্টোর, বাছির ফার্নিচার, মহসিন ভেরাইটিজ স্টোর, চন্দন সেলুন, হাফিজ ভেরাইটিজ স্টোর, নজরুল মিয়ার গুদাম ঘর এবং জুয়েল মিয়া’র বসত বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।এতে প্রায় কোটি টাকারও অধিক মূল্যের মালামাল পুড়ে বিনষ্ট হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণেই আগুনে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক, কমলগঞ্জ পৌর মেয়র মোঃ জুয়েল আহমেদ, কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম, মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব তরফদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দোকানের আয় দিয়েই তাদের সংসার চলত। এখন তাদের পথে বসার উপক্রম। তারা এর সুষ্ট বিচার ও ক্ষয়ক্ষতি পুসিয়ে পাওয়ার দাবি করেন।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন জানান, আমরা ঘটনার খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে এসে প্রায় একঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে পেরেছি। আমাদের আরো কিছুক্ষণ আগে জানালে আগুনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো কমানো যেত।
কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার আব্দুল কাদির জানান, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের পানির পাম্পটি হঠাৎ বিকল হওয়ায় তাৎক্ষনিক সমস্যার সৃষ্ঠি হয়।
এদিকে কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের এমন গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ প্রায় ৩শতাধিক এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রনের পর দীর্ঘসময় কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে ।
পরে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির বিষয়টি তদন্তক্রমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরন প্রদানের আশ্বাস দিলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িটিকে ছেড়ে দেয় বিক্ষুদ্ধ জনতা।