Logo
সংবাদ শিরোনাম :
জুড়ীতে সন্ত্রাসী হামলায় উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতিসহ ৬ জন আহত ৪ শত চা শ্রমিকদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কমলগঞ্জে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত কমলগঞ্জের একজন প্রধান শিক্ষক মো. খুরশেদ আলীর কথা সিলেটে তেলের খনির সন্ধান লাভ কমলগঞ্জে ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে এডভোকেসী সভা কমলগঞ্জে ৪ জন জয়িতাকে সংর্বধনা প্রদান কমলগঞ্জে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালন কমলগঞ্জের বাজারে পেয়াজের ঝাঁজে অতিষ্ট ভোক্তারা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে আমন ধান ও শীতকালীন সবজী নষ্ট কমলগঞ্জে বাসার সামনে থাকা বাসে রহস্যজনক আগুন কমলগঞ্জে কালর্ভাটের নিচে চা শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ পরীক্ষা শেষে হাতির পিঠে চড়ে বাড়ী ফেরা ! মৌলভীবাজারের ৭ থানার ওসি রদবদল কমলগঞ্জে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে টাকা দাবির অভিযোগ ৫১তম নব বিমানসেনা দলের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত মহিলা অধিদপ্তর কর্তৃক কমলগঞ্জে কিশোর-কিশোরী ক্লাবে সদস্য ভর্তি শুরু কমলগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত-২ মৌলভীবাজার-৪ আসনে ১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল কমলগঞ্জে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উপকরণ প্রদান

বাবা-মাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ শ্রীমঙ্গলে ১৪ বছরের কিশোরী শুভা

রিপোটার : / ৫৫২ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : সোমবার, ১০ আগস্ট, ২০২০

কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।।

বাবা-মাকে হারিয়ে চৌদ্দ বছরের কিশোরী শুভা তন্ত্রবাইয়ের মুখে কোন কথা নেই। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে সে। কি হয়েছে আর কি হবে সেদিকে তার কোন খেয়ালই নেই। নির্বাক চোখে-আশপাশ মানুষগুলোর মুখের দিকেই চেয়ে আছে; ছোট ভাই-বোন দু‘টিকে আদরে আগলে ধরে রেখেছে সে।

আর বোনের ঘাড়ে মাথা রেখে দু‘বছরের দেবা তন্ত্রবাই ঘুম চোখে বার বার মাকে খুঁজে ফিরছে। বাবা-মা যে আজ আর নেই! এ কথাগুলো কে বুঝাবে এ অবুঝ শিশুদের।

এমন নির্মম দুর্ঘটনার দু‘দিন পার হলো। রাতের পর আরেক আলোকিত দিন এসেছে কিন্তু তাদের বাবা মা আর নেই।

কিশোরী শুভা। সে নিজেই এখনো বুঝে উঠতে পারছে না বাবা-মার নির্মম এ হত্যাকাণ্ড। ছয় বছরের বেবি তন্ত্রবাই তার ছোট বোনের মতো সেও মাকে খোঁজে না পেয়ে- বাবার কাছে যেতে চাচ্ছে বার বার। এ অবস্থায় বড় বোন শুভার এখন কিছুই করার নাই।

সোমবার (১০ আগস্ট) শুভা তন্ত্রবাইয়ের সাথে কথা হয় সাংবাদিকদের।

তিনি জানান, বাবা-মার মাঝে তো কিছু হতে দেখেনি। শনিবার রাতে (৮ আগস্ট) বাবা-মা সবাই মিলে একসাথে খাওয়া-দাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়ি। এক খাটে শুয়েছিলো বাবা মা ও বোনেরা। ছোট বোন দেবা তন্ত্রবাই মাকে আদরে জড়িয়ে ছিলো। আর বাবাকেও দেখলাম প্রতিদিনের মতো একরকম। সকালে উঠেই দেখি এ অবস্থা।

তবে পুলিশ বলছে, পারিবারিক কলহের জের ধরেই বিপুল তন্ত্রবাই দা দিয়ে কুপিয়ে তার স্ত্রী অলক তন্ত্রবাইকে গলা কেটে হত্যা করেছে।

তবে প্রতিবেশী এবং চা-বাগান পঞ্চায়েত সম্পাদক রঞ্জিত সাঁওতাল বলছেন অন্য কথা।

পঞ্চায়েত এ নেতা জানান, বিপুল ও অলকের ঝগড়া-ঝাঁটি নিয়ে কোন দিন তো সালিশ করতে হয়নি। এমনকি বিচারও তো কেউ দেয়নি। তাহলে কিভাবে আমরা বলি পারিবারিক কলহের জেরে এ দু‘টি খুন। একই বক্তব্য সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল বৌলাছড়া চা বাগান ঘুরে আসা একাধিক ব্যক্তির ও সংবাদকর্মীদের।

তরুণ সংবাদকর্মী শিমুল তরফদার কিশোরী শুভার কথা পর্যালোচনা করে বলেন, মাটির ছোট একটি ঘরে দা দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর স্বামী নিজে গলায় রশি দিলো। অথচ কোন সাড়াশব্দ পেলো না কোনো সন্তান; এটি হতে পারে না। এ বিষয়টি এ সংবাদকর্মীসহ অনেকের কাছেই ধোঁয়াশা লাগছে।

তবে এর সত্যতা যাচাই করতে গেলে পাশের কোন চা-শ্রমিক পরিবারই কথা বলতে রাজি হননি। শুধু তাই না একাধিক শিশু এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে- রহস্যজনক কারণে তাতে বাধা আসে।

শ্রীমঙ্গল থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সোহেল রানার সাথে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা হয়।

তিনি জানান, মানবিক সহায়তা যাতে পায় এ অবুঝ শিশুরা এর জন্য বাগান ব্যবস্থাপকের সাথে তাদের কথা হয়েছে। চেষ্টা থাকবে তাদের প্রয়োজনে কিছু করে দেয়ার।

তবে বড় মেয়ে শুভা প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বাগানে মায়ের স্থলে কাজের সুযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে বাচ্চা তিনটি এখন পাশের ঘরে কাকীমাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। জানা গেল, রত্না কাকীমা তাদের আদরে আগলে আছেন। সকলেই চিন্তিত এ অনাথ বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে।

রোববার (৯ আগস্ট) পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যার পর স্বামী নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাটি ঘটে মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলার বৌলাছড়া চা-বাগান বস্তিতে। চা-শ্রমিক দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। এ চা-শ্রমিক দম্পতির তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওসি আব্দুস ছালেক জানান, সকাল ৮টার দিকে বৌলাছড়া চা-বাগান থেকে খবর পাওয়া যায় যে দু‘জন চা-শ্রমিক হত্যার ঘটনা ঘটে। এতে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ সকালেই বৌলাছড়া চা-বাগান বস্তিতে গিয়ে উপস্থিত হন। এ সময় পুলিশ একটি মাটির ঘরে ঢুকে চা-শ্রমিক বিপুল তন্ত্রবাইকে (৪০) ঘরের ছাদের সাথে দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত ও মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। আর তার স্ত্রীকে গলা কাটা অবস্থায় মাটিতে পড়া থাকা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে।


আরো সংবাদ পড়ুন...
Developed By Radwan Ahmed