Logo

কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের মানববন্ধনে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

রিপোটার : / ৫২৯ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০

কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।।

সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে পরিবার প্রতি ৫ হাজার টাকা করে সহায়তার চেক বিতরণের তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম উল্লেখ করে প্রতিবাদে করে মৌলভীবাজাররে কমলগঞ্জে সরকারী মালিকানাধীন কুরমা চা বাগানে একদল চা শ্রমিক। কুরমা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে আরও একদল শ্রমিক এ মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বাঁধার সৃষ্টি করলে দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায় দুই পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ফলে ২ নারীসহ ৬ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা থেকে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চা শ্রমিকদের মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

রোববার (৫ জুলাই) সকাল ১১টায় এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলে বেলা ১টায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি)-ও মালিকানাধীন কুরমা চা বাগানের পরিস্থিতি পুলিশি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

কুরমা চা বাগানের শ্রমিক নারী নেত্রী গীতা রানী কানু বলেন, ‘গত জুন মাসে সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য কমলগঞ্জের ২২টি চা বাগানের তালিকাভুক্ত চা শ্রমিকদের ৫ হাজার টাকার সহায়তা চেক প্রদান করা হয়। তবে জনপ্রতিনিধি ও চা বাগান পঞ্চায়েতের মাধ্যমে করা এসব তালিকায় প্রকৃত অসংখ্য হতদরিদ্র চা শ্রমিককে বাদ দিয়ে চা শ্রমিক নয় এমন মানুষের নাম রয়েছে। এমনকি পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দের স্বজন, চা বাগান কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয় স্বজনের নাম তালিকায় রয়েছে। এর প্রতিবাদে সুষ্ঠু তদন্তক্রমে নতুন করে তালিকা প্রণয়নে ইতোমধ্যেই শমশেরনগর, দেওড়াছড়া, মৃর্তিঙ্গা ও কুরমা চা বাগান থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। সে আবেদনে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না করে ত্রুটিমুক্ত তালিকা মতে অনুদানের চেক বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে রোববার সকালে কুরমা চা বাগানে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘এ মানববন্ধনে বাধা সৃষ্টি করেন কুরমা চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি নারদ পাশী, সাদত আলী,সাধু পাশী, সুরজান বিবি, বাবু লাল, আরজু মিয়া, গীতা দাস, হারিছ মিয়ার নেতৃত্বে একটি দল। এতে দুই পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ধাওয়ার সময় আহত হয়েছেন কার্তিক পাল (৫০), নওশাদ মিয়া (৩৮), উষা পাল (৩৫), বাবুল কৈরী (৩০), গীতা রানী কানু (৪০) ও দ্বীফ কুমার (৩৮)। এ ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’

গীতা রানী কানু আরও বলেন, ‘তাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করতে না দিয়ে বাধা সৃষ্টিকারীরা তাকে একটি দোকানে এক ঘন্টা অবরুদ্ধ করেও রেখেছিলেন। পুলিশ আসার পর তিনি মুক্ত হয়ে পুলিশি উপস্থিতিতে ফুটবল মাঠ লাইনে বেলা ১টায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।’

এ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন নওশাদ মিয়া, সনজীৎ দাস, গীতা রানী কানু প্রমুখ। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করবেন বলেও গীতা রানী কানু জানান।

তবে কুরমা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি নারদ পাশী বলেন, ‘চা শ্রমিকদের ৫ হাজার টাকার তালিকায় কোন ভুল ছিল না। সঠিক মানুষের নাম তালিকায় রয়েছে। গীতা রানী কানু অহেতুক আন্দোলন শুরু করেছে। এতে দরিদ্র চা শ্রমিকরা পরবর্তীতে সমাজ সেবার প্রদত্ত ৫ হাজার টাকা না ও পেতে পারেন। তাই তিনিসহ সাধারণ চা শ্রমিকদের একটি অংশ মানববন্ধন কর্মসূচিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এখানে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি আর কেই আহত হয়নি। কাউকে অবরুদ্ধও করা হয়নি। পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়।’

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান মানববন্ধন নিয়ে কুরমা চা বাগানে দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাছাড়া গীতা রানী কানুর নেতৃত্বে চা শ্রমিকদের একটি পক্ষ মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছে। তিনি আরও বলেন এ ঘটনায় এখনও কোন অভিযোগ করা হয়নি।


আরো সংবাদ পড়ুন...
Developed By Radwan Ahmed