কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।। মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন খাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে ২টি ট্যুরিস্ট বাস। চালুর পর থেকেই বাস দুইটি সাড়া ফেলেছে ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে। অল্প খরচ ও সময়ে জেলার প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্রগুলা দেখার জন্য বাস দুটি ভূমিকা রাখবে এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্টদের।
গতকাল ট্যুরিস্ট বাসের ভ্রমণপিপাসু যাত্রীরা বলেন। প্রায় সব যাত্রী বাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, খাবার মান ও সংশ্লিষ্টদের আচরণে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা জানান, এ বাসে চড়ে যতগুলো স্থান একদিনে ভ্রমণ করা যায়, গণপরিবহনে চড়ে তা সম্ভব নয়। বিশেষ করে ছোট দলে যারা বেড়াতে আসে তাদের অনেক অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। আবার ব্যক্তিগতভাবে গণপরিবহন ভাড়া করে ঘুরলেও এর চেয়ে বেশি ভাড়া গুনতে হয় পর্যটকদের।
কুমিল্লা থেকে ঘুরতে আসা ফারাহ্ তাবাস্সুম সূত্রে জানান,এ উদ্যোগ তার ভালো লেগেছে। একদিকে অর্থ ও সময় সাশ্রয়, অন্যদিকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এতে জেলায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে। তবে তিনি সকালে যাত্রার সময়টা আরেকটু এগিয়ে নিয়ে আসার দাবি জানান।
স্থানীয় আরেক পর্যটক নাজিয়া চৌধুরী তাসপিয়া বলেন তার ভাল লাগার কথা। বাসের সেবা নিয়ে তিনিও খুশি। আরো বলেন চলন্ত বাসের ভেতর থেকে প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলোও তিনি খুব উপভোগ করেছেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার সাতটি উপজেলায়ই রয়েছে প্রাকৃতিক অনেক পর্যটন স্পট। চা বাগানের পাশাপাশি রয়েছে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ। শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাইক্কা বিল, চা গবেষণা কেন্দ্র, বধ্যভূমি ৭১, সীতেশ দেবের চিড়িয়াখানা। বড়লেখার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, হাকালুকি হাওর। সদর উপজেলার বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক, রাজনগরের জলের গ্রাম অন্তেহরি, কুলাউড়ার গগনটিলার মত নয়নাভিরাম পর্যটন স্পট। দর্শনীয় এসব স্থান ঘুরে দেখতে সময় ও অর্থের প্রয়োজন। তাছাড়া গণপরিবহনে রয়েছে নানা বিড়ম্বনা। জেলায় আসা ভ্রমণপিপাসুদের ভ্রমণকে আরো সহজ ও আনন্দময় করতে ট্যুরিস্ট বাস চালুর এ উদ্যোগ।
এ জেলাকে আরো পর্যটকবান্ধব করতে এবং পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বাস দুটি চালু করা হয়েছে। ফাতেমা এন্টারপ্রাইজের সহায়তায় বাস দুটি গত ১৬ অক্টোবর থেকে সেবা চালু করেছে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, এই বাস সেবা চালুর ফলে মৌলভীবাজারের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে। আর পর্যটন খাতের অন্যতম শর্ত হচ্ছে যাতায়াত সুবিধা। অনেকে যাতায়াত সমস্যার কারণে সব পর্যটন স্পট দেখতে পারেন না। থাকে নিরাপত্তার বিষয়টিও। তাই পর্যটকদেও সার্বিক সুবিধার্থে এ বাস চালু করা হয়েছে। সেবার মান পর্যটকদের আস্থা অর্জন করলে ভবিষ্যতে বাসের সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে।