কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় অবৈধ ‘বোমা মেশিন’ দিয়ে ফসলি জমি ও ছড়া থেকে মূল্যবান সিলিকা বালু উত্তোলন করছেন একটি সিন্ডিকেট। এতে কয়েক কিলোমিটার এলাকা ভূমিধস ও পানি সংকটের আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। হুমকিতে রয়েছে তিন ইউনিয়নের অন্তত প্রায় ১৫ থেকে ২০টি গ্রাম।
দীর্ঘ ১২ বছরধরে নির্বিঘ্নে বোমা মেশিন দিয়ে ফসলি জমি পুকুর আর ছড়া থেকে ‘সাদা সোনা’ বলে খ্যাত সিলিকা বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ে ওই সিন্ডিকেট গ্রামীণ রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভার্ট ও ফসলি জমির ভূপ্রকৃতির অবস্থান বিনষ্ট করেছে। ফলে দুটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ভূপৃষ্টের পানির সংকটসহ ভুমিধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব সিলিকা বালু প্রতি ফুট ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে ট্রাক যোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। রাস্ট্রীয় সম্পদের এমন হরিলুট করে প্রভাবশালী চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে সাতগাঁও লছনা নামক স্থানে। সেখানে থেকে সাতগাঁও স্টেশন চৌমুহনা ও ভুনবীর চৌমুহনা থেকে মির্জাপুর ইউনিয়নের বৌলাশীর পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কের দুপাশে অসংখ্য বালুর স্তুপ করে রাখা হয়েছে।
বালু ব্যবসাটি এলাকায় এমন পরিস্থিতি ধারণ করেছে লাভজনক হওয়াতে গ্রামের ভেতর দিয়ে ছোট ছোট ছড়া ও গ্রামে পুকুর থেকে বোমা মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। প্রশাসন অভিযানে আসলে বালু তোলার কৌশল পরিবর্তন করে এখন রাতের আধারেও চলছে মূল্যবান সিলিকা বালু হরিলুট।
উপজেলায় একটি সাধারণ বালু ও ২৮টি সিলিকা বালুসহ মোট ২৯টি বালুর মহাল রয়েছে। এরমধ্যে বড়ছড়া, ঝলমছড়া, ভুরভুরিয়া ছড়া, জৈনকাছড়া, খাইছড়া, শাওনছড়া, নুলুয়াছড়া, পুটিয়াছড়া, হুগলিছড়া, গান্ধিছড়া ও আমরাইলছড়ায় প্রায় একযুগ ধরে বালু উত্তোলনে ইজারা বন্দোবস্ত নেই। অথচ উপজেলাজুড়ে পাহাড়ি ছড়া, ছোট নদী ও ফসলি জমি থেকে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন।
২০০৯ সাল থেকে উচ্চ আদালত ‘বোমা মেশিন’ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইউনিয়নটির প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পাইপ বসিয়ে উচ্চক্ষমতাপূর্ণ পাওয়ার পাম্প ব্যবহার করে এ যন্ত্র দিয়ে মাটির ১শ’ থেকে ২শ’ ফুট তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করছেন এই চক্র।