Logo
সংবাদ শিরোনাম :
মণিপুরীদের ঐতিহাসিক ‘চহি তারেৎ খুনতাকপা’ দিবস উদযাপন প্রেসক্লাব সভাপতির পুত্র শৈবালে‘র ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ কমলগঞ্জে বোরো চাষের জন্য কৃষকের উদ্যোগে ক্রসবাঁধ নির্মাণ সিপিএসটি-২০ প্রাইজমানি ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে হবিগঞ্জ চ্যাম্পিয়ন কিশোরকণ্ঠ মেধাবৃত্তি পরীক্ষা ২০২৩ এর ফল প্রকাশ কমলগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক রসুলপুরে নৌকার নির্বাচনী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত আম্বিয়া কিন্ডারগার্টেন স্কুলে অভিভাবক দিবস পালন। কমলগঞ্জে পূর্ব শক্রতার জের ধরে হামলা; ৩ জনকে আটক করে গণপিটুনি মৌলভীবাজারে তৃণমূল পর্যায়ে সরকারি সেবার মানোন্নয়নে গণশুনানি বড়দিন উৎসবকে ঘিরে কমলগঞ্জের ৪৪টি গির্জায় চলছে প্রস্তুতি সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মছব্বির স্মরণে আলোচনা সভা কমলগঞ্জে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা পুলিশ এসল্ট মামলায় কমলগঞ্জে যুবদল নেতা পৌর কাউন্সিলর গ্রেপ্তার কমলগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ মৌলভীবাজারের ৪টি আসনে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণায় প্রার্থীরা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মৌলভীবাজারের ৪টি আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন ২০ জন প্রার্থী কমলগঞ্জে যুব ফোরাম গঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় কমলগঞ্জে ৫২ তম বিজয় দিবস উদযাপন কমলগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

মৌলভীবাজারে সুগন্ধী আগর-আতর শিল্প হুমকিতে

রিপোটার : / ৭৩৯ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।।

দেশ-বিদেশের ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ায় দেশের একামাত্র সুগন্ধী আগর আতর শিল্প হুমকির সম্মুখীন। ইতোমধ্যে এ শিল্পের দুই শতাধিক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার কারিগর। ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, এ পর্যন্ত তাদের প্রায় সত্তর কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। তবে করোনাকালীনে ক্ষতিগ্রস্ত এ শিল্পের সহায়তায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে নিয়ে ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আগর গাছ এক ধরনের সুগন্ধীয় জাতীয় কাঠ। এ গাছের নির্জাস থেকেই মূলত আতর উৎপাদন হয়ে থাকে। সেই সাথে গাছের ভিতরের জমাট-বাধা নির্জাসের অংশটুকুই হচ্ছে মূলবান আগর কাঠ। এটিকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে পরবর্তীতে আতর তৈরি করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ২০০ বছর ধরে মৌলভীবাজার বড়লেখার সোজনগর ইউনিয়ন জুড়ে-এ আগর-আতর উৎপাদিত হয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় এখন বড়লেখা উপজেলার প্রায় সবকটি গ্রামের লোকজন আগর আতর উৎপাদন এবং বিক্রি সাথে জড়িত।শুধু তাই না আগর গাছের কদর থাকায় এ উপজেলার অনেকেই পাহাড় টিলায় আগর বাগান গড়ে তুলেছেন। আর এ আগর গাছ বিক্রি থেকেও প্রচুর লাভবান হচ্ছেন তারা।

এ আগর আতরের মূল ক্রেতা (ব্যবহারকারী) মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এখানের ব্যবসায়ীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে রফতানির মাধ্যমে এ পণ্য বিক্রি থেকে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেন। এদিকে করোনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্ব বাজারের ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ায় আগর আতর শিল্প হুমকির সম্মুখীন।

সুজানগর ইউনিয়নের একাধিক আগর আতর ব্যবসায়ী জানান, গত বছর এ শিল্প থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে। এ বছর উৎপাদন মৌসুমের শুরু থেকেই তাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রতি মাসে কম করে হলেও তাদের কারখানায় ২০০ কেজি আগর কাঠ ও আড়াইশ লিটার আতর উৎপাদিত হতো। বিগত পাঁচ মাসে উৎপাদন একেবারে শূন্য। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা।

এ ব্যাপারে কথা হয় দীর্ঘদিন ধরে আগর আতর উৎপাদনে জড়িত ব্যবসায়ী সুজানগর পারফিউমারি কোম্পানির পরিচালক আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে।

তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতা না আসায় তার দুই কোটি টাকার আগর আতর পড়ে আছে। বন্ধ হয়ে আছে সুজানগর ইউনিয়নের এ শিল্পের সবকটি কারখানা।

আব্দুল কুদ্দুস আরও জানান, এ কয়েক মাসে ব্যবসায়ীদের ষাট থেকে সত্তর কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আতর ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি বকুল আহমদ জানান, ব্যাংক লোন নিয়ে যেসব ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন তারা এখন চরম বেকায়দায় পড়েছেন। আগর আতর ব্যবসায়ী এ নেতা জানান, বছরে তার পঞ্চাশ থেকে ষাট লাখ টাকা আয় হতো। ব্যবসা বন্ধ থাকায় তিনি হিমশিম খাচ্ছেন।

কথা হয় ব্যবসায়ী আবুল কাশেম, সিতাব বক্স ও জোসেফ হাসানের সঙ্গে। আবুল কাশেম মূলত আগরের কাঠ (টুকরা) রফতানি করে থাকেন। তিনি জানান, এবারের করোনায় তার কয়েক কোটি টাকার কাঠ আটকে আছে। সরকারের সহায়তার দাবি করছেন তিনি। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আগর আতর রফতানি বন্ধের কথা জানান সিতাব বক্স।

হাসান আল উদ নামের আগর আতর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের তরুণ পরিচালক জোসেফ জানান, এ এলাকার প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এভাবে এ শিল্পের ধ্বংস দেখা দিবে কেউ কল্পনাই করেনি।

সুজানগর পারফিউমারি কোম্পানির শ্রমিক ইউসুফ মিয়া জানান, কাজ না থাকায় এ এলাকার কয়েক হাজার কারিগর বেকার হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

তিনি জানান, একটি প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিনশ’ মানুষ কাজ করতো। এখন কারখানা জুড়ে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে।

এদিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রমাসক (ডিসি) মীর নাহিদ আহসান বলেন, ক্ষতির হাত থেকে এ শিল্প ও ব্যবসায়ীকে বাঁচাতে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (সার্বিক) প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এছাড়া এ শিল্পের উন্নয়নে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে একটি টিম ইতোমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করে গেছে।


আরো সংবাদ পড়ুন...
Developed By Radwan Ahmed