কমলকন্ঠ রিপোর্ট ।। দিন-মজুর স্বামী মো. রাজা মিয়া ১১ বছর আগে মারা গেছেন। তার দুই বিধবা স্ত্রীর তিন ছেলে দুই মেয়ে। মৃত রাজা মিয়ার বড় স্ত্রী জাহানারা বেগম সেলাই মেশিনে কাজ করেন ও ছোট স্ত্রী হালিমা বেগম গৃহিণী। তাদের সব সন্তানই বেকার। সেলাই মেশিনে এলাকার মানুষের কাপড় তৈরি করেই সংসার চলছে কোনো রকমে।
স্বামীর রেখে যাওয়া মাটির দেয়ালের জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করে আসছিলেন এই দুই বিধবা নারী। তাদের জীবন চলে পাড়া-প্রতিবেশিদের কাছে হাত পেতে নেয়া চাল-ডালে। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে আকস্মিকভাবে মাটির দেয়ালের বাড়িটি ধসে পড়ে। ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন অসহায় দুই নারী।
ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌর এলাকার বড়গাছ গ্রামে। এ খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে আসেন এই অসহায় পরিবারের পাশে।
আলাপকালে দুই বিধবা নারী বলেন, দিনমজুর স্বামী ১১ বছর আগে মারা গেছেন। কিন্তু তারা হতদরিদ্র। এমতাবস্থায় পাড়া-প্রতিবেশিদের কাছে হাত পেতে নেয়া চাল-ডাল খেয়ে না খেয়ে জীবন চলে তাদের। আর সরকারের দেয়া বিধবা ভাতার টাকায় চলে তাদের ওষুধ খরচ। স্বামীর রেখে যাওয়া মাটির দেয়ালের জরাজীর্ণ বাড়িটিই ছিল তাদের মাথা গোঁজার ঠাই।
বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করে মাটির বাড়িটির দেয়াল ধসে পড়ে। বরাবরের মতো ধসে পড়ার দিনেও তারা ওই বাড়িতেই শুয়েছিলেন। ধসে পড়া মাটির ঘরে কিভাবে থাকবেন জানেন না তারা। একটি ঘরের জন্য অনেকবার আবেদন করেও কপালে তা জুটেনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটা বসবাস উপযোগী ঘরের দাবী তাদের।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল হোসেন বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের ঘর দেখে এসেছি। তাদের ঘরের জন্য অনেকবার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসে আবেদন করিয়েছি।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘বিধবা নারীদের দেয়াল ভাঙা ঘর পরিদর্শন করে এসেছি। সরকারিভাবে যাতে তারা ঘর পায় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, খবরটি শুনে মানবিক কারণে থানার পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা নিয়ে তিনি সে বাড়িতে গেছেন। এ পরিবারের জন্য পরবর্তী সহায়তা নিয়ে তিনি উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলবেন।